রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখতে কক্সবাজারে গুতেরেস-জিম

রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম।

সোমবার সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তারা কক্সবাজারে পৌঁছান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীও তাদের সঙ্গে রয়েছেন।

সেখান থেকে দুই অতিথিকে নিয়ে যাওয়া হয় কক্সবাজারের অভিজাত হোটেল সায়মান বিচ রিসোর্টে। সেখানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁদের ব্রিফিং করবেন।

এরপর ৯টা ৪০ মিনিটে তাঁরা হোটেল থেকে উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পের উদ্দেশে রওনা হবেন। সেখানে পৌঁছে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা নতুন আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলবেন। পরে নতুন বর্ধিত রোহিঙ্গা শিবির ক্যাম্প-৪ পরিদর্শন করবেন তাঁরা।

এরপর জাতিসংঘের মহাসচিব ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ইউএনএফপিএ পরিচালিত মহিলাবান্ধব কেন্দ্রে যাবেন এবং ১০-১৫ রোহিঙ্গা নারীর কাছ থেকে শুনবেন মিয়ানমারের নির্যাতনের বর্ণনা। এরপর ডি-৪ ক্যাম্পে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম পরিচালিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পরিদর্শন করবেন। সেখান থেকে ডি-৫ ক্যাম্পে গিয়ে নির্যাতিত রোহিঙ্গা পুরুষ ও নারীদের সঙ্গে আলাপ শেষে বিকেল ৩টার দিকে তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।

বিকেলে হোটেলে ফিরে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে সভা করবেন এবং সাড়ে ৫টার দিকে ফেসবুক লাইভে সংযুক্ত হবেন। এরপরই তাঁরা ঢাকার উদ্দেশে কক্সবাজার ত্যাগ করবেন।

গত বছরের ২৪ আগস্ট রাতে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতার মুখে আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এর আগে বিভিন্ন সময় সে দেশের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে আসা আরো চার লাখের মতো রোহিঙ্গা কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে।

জাতিসংঘ ওই অভিযানকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে আসছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ রোহিঙ্গা সংকটকে এশিয়ার এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকার গত বছরের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করলেও নানা জটিলতায় বিষয়টি এগোয়নি।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলে আসছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা শরণার্থীরা যাতে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং সম্মানের সঙ্গে নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারে এবং এই প্রত্যাবাসন যাতে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করে হয়, তা নিশ্চিত করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে মিয়ানমারকে।